চুনারুঘাট উপজেলার মির্জা পুর গ্রামের জামির আলী বলেন, ধানকাটা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক সংকট শুরু হয়েছে অন্য দিকে জমিনে কিছু দিন আগে যে বৃষ্টি হয়েছে । ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছি। এছাড়া ধানের দামও কমে গেছে।
এখন প্রতিমণ ধান ৬০০থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একজন শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে ৫/৬ শত টাকা । এতে আমাদের তেমন কিছুই থাকছে না।”
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সোলজুরাগ্রামের কৃষক কুদ্দুছ মিয়া বলেন, “সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিক দিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান চাষে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধান কাটতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ঝড়-বৃষ্টির ভয় আছে সামনে কিছু দিন আগে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েগেছ আমাদের অনেক ক্ষতি করছে সরকার কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের ব্যবস্থা করলে আমরা সহজে ধান ঘরে তুলতে পারতাম।
শ্রমিক সংকটে শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না সেই অনিশ্চয়তার কথা জানালেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হুরগাঁও গ্রামের কৃষক জমির আলী ।
তিনি বলেন এখন আমরা পরিবারের লোকজন ধান কাটছি। এক কিয়া’র ধান কাটতে লেবার খরচ আছে ৪ হাজার টাকা । ধান বিক্রি করেই এ খরচ মেটানো হয়। এখন ধানের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে।
মহাজনরা পানির দামে ধান কিনে মজুদ করে লাভবান হচ্ছে। সরকার যদি আমাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনে তাহলে আমাদের লাভ হত।
শ্রমিক কুদরত আলী বলেন সকালে শীত দুপুরে প্রচণ্ড গরমে ধান কাটি, কাঁধে করে বাড়ি নেওয়ার পরে মাড়াই করার কাজ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কষ্ট আনুযায়ী পয়সা পাওয়া যায় না।
তাই এ কষ্টের কাজ এখন আর কেউ করতে চায় না। সবাই অন্য পেশায় চলে গেছে। আমরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধান কাটতে আসি উজান থেকে এ কারণে ধানকাটা শ্রমিক সংকট প্রকট হয়েছে।
কৃষকের এই সমস্যার বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি পরিচালক রতন পাল বলেন, কৃষি ফার্মকে যান্ত্রিকীকরণ করা হলে কৃষক এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে।
কোন দুর্যোগ যদি না আসে তাহলে চলতি বছর রোপা আমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে কৃষকের গোলায় ধান উঠবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ জানা গেছে, চলতি বছর জেলার নয়টি উপজেলায় রোপা আমনের জমি চাষ করা হয়েছে ৮৮ হাজার ২৫৮ হেক্টর। সে হিসাবে এ বছর রোপা আমনের ধান উঠবে ৬১ লাখ ১৭ হাজার ৭২৫ মণ। যার বাজার মূল্য হবে ৭৬৪ কোটি টাকা।